বিশেষ প্রতিনিধি, বিশেষ প্রতিনিধি।।

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শেষ করতেই যদি যুক্তরাষ্ট্র জোর দেয়, কোনো পরমাণু চুক্তি হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। ইতালির রোমে ওয়াশিংটন-তেহরান পঞ্চম দফার পরমাণু আলোচনাকে সামনে রেখে তিনি জানান, পরমাণু অস্ত্র তৈরির কোনো ইচ্ছা ইরানের নেই। এমন পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউজ বলছে, নীরবতা ভেঙে ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেছেন ট্রাম্প-নেতানিয়াহু।

যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পরমাণু চুক্তি নিয়ে জলঘোলা হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই। বিশ্বের অনেক দেশই পরমাণু শক্তিধর। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের চিরশত্রু চীন আর রাশিয়াও। এরপরও ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়েই ডোনাল্ড ট্রাম্পের যত মাথাব্যথা। চার দফার আলোচনায় ফলপ্রসূ কোনো সমাধান না আসায় এবার ইতালির রোমে পঞ্চম দফায় আলোচনায় বসছে ওয়াশিংটন-তেহরান প্রতিনিধি দল। এরমধ্যেই ট্রাম্প, খামেনি, নেতানিয়াহুর পাল্টাপাল্টি বাক্য বিনিময় চলছেই।

আলোচনায় বসার আগেই ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, পরমাণু চুক্তির মানে যদি হয়, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো পরমাণু চুক্তি হবে না। ইরানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে তিনি জানান, পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা ইরানের লক্ষ্য হলে সেটা তেহরান অনেক আগেই তৈরি করতো, সেই সক্ষমতা ইরানের আছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হয় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করা, তাহলে কোনো চুক্তি হবে না। ইরানের মানুষের কাছ থেকে পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের অধিকার তারা কেড়ে নিতে পারে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বহুবার বলেছেন, ইরানের কাছে পরমাণু অস্ত্র থাকতে পারবে না। ইসলামিক প্রজাতন্ত্র যদি চায়, পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারে। কিন্তু আমাদের সেই ইচ্ছা নেই। আমাদের সক্ষমতা আছে ঠিকই।’

এমন অবস্থায় ইরানের পরমাণু ইস্যুতে নীরবতা ভেঙেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প আর তার মিত্র বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। হোয়াইট হাউজ বলছে, ইরানের পরমাণু চুক্তি নিয়ে দুই দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে গতকাল (বৃহস্পতিবার, ২৩ মে) ফোনালাপ হয়েছে। একইদিন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ছাড়া চুক্তি হলে তা ইসরাইল স্বাগত জানায়। তার দাবি, ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে দেয়া যাবে না। যদি ঝুঁকিপূর্ণ কোনোকিছু ঘটে, ইসরাইল নিজেদের আত্মরক্ষায় সব করবে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা করছি। সম্মান করছি। একসঙ্গে এমন কিছু নিশ্চিত করতে হবে যেন ইরানের কাছে পরমাণু অস্ত্র না থাকে। হামাস যেন গাজার দায়িত্বে না থাকে। ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। অসাধারণ পরিকল্পনা তার। আরব বিশ্বের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সখ্যতায় আমার কোনো সমস্যা নেই। আব্রাহাম অ্যাকর্ডের জন্য এটা অবশ্যই ভালো

এমন অবস্থায় ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু চুক্তি হবে, না মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও বাড়বে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন বিশ্লেষকরা।